দেবব্রত মন্ডল ( বাঁকুড়া ) : জল, জঙ্গল, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, প্রাচীণ স্থাপত্য ভাস্কর্যের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে বাঁকুড়ার জয়পুর সমুদ্র বাঁধেও। যার টানে কোভিড পরিস্থিতিতেও পর্যটকের ঢল নেমেছে এখানে। এই অবস্থায় আরো বেশী বেশী পর্যটক টানতে উদ্যোগী হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। শনিবার নবতম সংযোজন হিসেবে এখানে নৌকাবিহারের উদ্বোধন করলেন স্থানীয় বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা।প্রসঙ্গত, ‘বাঁকুড়ার জয়পুর’ বললেই সবার প্রথমে চোখের সামনে ভেসে ওঠে ঘন শাল, মহুল, পিয়াশাল, বহেড়া, হরিতকির এক বিশালাকার জঙ্গল। ৬হাজার ৩৩১ হেক্টর জায়গা নিয়ে এই বনাঞ্চলে ভাগ্য সহায় হলে দেখা মিলতে দলমার দাঁতালদের। তাছাড়া হরিণ, ময়ূর, বন শুয়োরদের অবাধ এই বিচরণ ক্ষেত্রে মন ভালো করা পরিবেশে কিছুটা সময় নিজের মতো করে কাটানোর সুযোগ মিলবে।এই জঙ্গলেই রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। আর এখান থেকেই সহজেই দেখা মিলতে পারে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো ময়ূর আর হরিন। এখান থেকেই খুব কাছেই রয়েছে বাঁকুড়া জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম জলাশয় সমুদ্র বাঁধ। প্রশাসনের উদ্যোগে এখন এই সমুদ্র বাঁধে শুরু হয়েছে বোটিং এর ব্যবস্থা। পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতি তৈরী করেছে ‘বনবিতান’ লজ। একই সঙ্গে রয়েছে সম্পূর্ণ গ্রামীণ পরিবেশে বনফুল রিসর্ট । প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভরা এই বনফুল রিসোর্টের ভেতরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ রয়েছে সুইমিংপুল এছাড়াও রাত্রিযাপনের জন্য রয়েছে কাঠের , বাসের ও সিমেন্টের তৈরি ছোট ছোট টি হাউস এছাড়াও রয়েছে তাঁবু খাটানো ট্রেন্ড ব্যবস্থা । এখানে এসে পর্যটকরা উপভোগ করতে পারেন আদিবাসী নৃত্য, বাউল গান থেকে ক্যাম্প ফায়ার সবই ।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি ইতিহাস প্রেমী মানুষ ঘুরে দেখছেন বেশ কিছু প্রাচীন মন্দির ও স্থাপত্য ভাস্কর্য৷ পাশাপাশি মল্লরাজাদের প্রাচীন রাজধানী প্রদ্যুম্নগড় ঘুরে দেখছেন পর্যটকরা। তাছাড়া এই এলাকায় মল্লরাজাদের তৈরী অসংখ্য টেরাকোটা সমৃদ্ধ মন্দিরের পাশাপাশি রয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশদের তৈরী সুবিশাল রানওয়ে।
ফলে জল, জঙ্গল, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য, প্রাচীন স্থাপত্য ভাস্কর্যের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে বাঁকুড়ার জয়পুরে। যার টানেই চলতি মরশুমে পর্যটকের ঢল নেমেছে এখানে।